হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামী ইতিহাসে যে ক'জন মহীয়সী নারীকে আদর্শ হিসেবে পরিগণিত করা হয়, হযরত ফাতিমা (সা.আ.) তাদের মধ্যে অন্যতম! আহলে বাইতের (আ.) অন্যতম প্রধান সদস্য ও জান্নাতি নারীদের নেত্রী হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর শান, মান ও মর্যাদা সম্পর্কে শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের হাদীস গ্রন্থসমূহে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে। হযরত ফাতিমা (সা.আ.) সম্পর্কে সেই অসংখ্য হাদীস হতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সূত্রে আমরা কেবল রাসুলুল্লাহ (সা.)’র পবিত্র জবান নিসৃত ৪০টি হাদীস ধারাবাহিকভাবে চার পর্বে উল্লেখ করব, ইনশাআল্লাহ।
২য় পর্বের ১০টি হাদীস নিম্নরূপ:
১১. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"أَوَّلُ مَنْ یَدْخُلُ الجَنَّةَ: عَلیٌّ وَفاطِمَة."
অর্থ: সর্বপ্রথম যাঁরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাঁরা হলো-আলী ও ফাতিমা!
[নূরুল আফছার, পৃষ্ঠা- ৫২; কানযুল উম্মাল, খন্ড- ১৩, পৃষ্ঠা- ৯৫]
১২. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"أُنْزِلَتْ آیَةُ التطْهِیرِ فِیْ خَمْسَةٍ فِیَّ، وَفِیْ عَلیٍّ وَحَسَنٍ وَحُسَیْنٍ وَفاطِمَة."
অর্থ: আয়াতে তাতহীরটি (পবিত্রতার আয়াত) ৫ জনের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল: আমি (মুহাম্মাদ), আলী, হাসান, হুসাইন এবং ফাতিমা।
[ইসআফু রাগেবিন, পৃষ্ঠা- ১১৬; সহীহ্ মুসলিম (কিতাব্ ফাজায়েল্ সাহাবা)]
১৩. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"أَفْضَلُ نِساءِ أَهْل الجَنَّةِ: مَرْیَمُ وَآسیةُ وَخَدیجَةُ وَفاطِمَة."
অর্থ: “জান্নাতের শ্রেষ্ঠ ও সর্বোচ্চ সম্মানীতা নারীরা হলেন- মরিয়ম, আসিয়া, খাদিজা ও ফাতিমা।”
[সেইর্ আ'লাম 'নুবলা, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা- ১২৬; যাখায়িরুল উকবা, পৃষ্ঠা- ৪৪]
১৪. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"أَوَّلُ مَنْ دَخَلَ الجَنَّةَ فاطِمَة."
অর্থ: ফাতিমা সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে।
[ইয়া নাবিয়্যুল মাওয়াদ্দাহ, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা- ৩২২, অধ্যায়- ৫৬]
১৫. রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও এরশাদ করেন,
"المَهْدِیِ مِنْ عِتْرَتی مِنْ وُلدِ فاطِمَة."
অর্থ: ইমাম মাহদী আমার ইতরাত (পরিবার) ও ফাতিমার সন্তান হতে!
[আস্ সাওয়ায়েকুল মুহরিকাহ, পৃষ্ঠা- ২৩৭]
১৬. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"إنّ اللّهَ عَزَّوَجَلَّ فَطـــَمَ ابْنَتِی فاطِمَـــة وَ وُلدَهـــا وَ مَنْ أَحَبًّهُمْ مِنَ النّارِ فَلِذلِكَ سُمّیَتْ فاطِمَة."
অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা আমার কন্যা ফাতিমা ও তাঁর সন্তান এবং যে তাঁদের ভালোবাসে, তাদের জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিয়েছেন, আর এজন্যই তার নাম ফাতিমা।
[কানযুল উম্মাল, খন্ড- ৬, পৃষ্ঠা- ২১৯]
১৭. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"فاطِمَة أَنْتِ أَوَّلُ أَهْلِ بَیْتی لُحُوقاً بِی."
অর্থ: হে ফাতিমা! আমার পর আমার পরিবার থেকে তুমিই সর্বপ্রথম ব্যক্তি যে (মৃত্যু পরবর্তী জগতে) আমার সাথে সাক্ষাৎ করবে!
[হিলইয়াতুল আউয়ালিয়া, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা- ৪০; সহীহ্ আল বুখারী, কিতাব্ ফাজায়েল; কানযুল উম্মাল, খন্ড-১৩, পৃষ্ঠা- ৯৩; মুন্তাখাবু কানযুল উম্মাল, খন্ড- ৫, পৃষ্ঠা- ৯৭]
১৮. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"فاطِمَة بَضْعَةٌ مِنّی یَسُرُّنِی ما یَسُرُّها."
অর্থ: ফাতেমা আমার শরীরেরই (অস্তিত্বের) অংশ, যা তাঁকে খুশি করে তা আমাকেও খুশি করে।
[আস্ সাওয়ায়েকুল মুহরিকাহ, পৃষ্ঠা- ১৮০, ২৩২; মুসতাদরাকুল হাকেম, মা’রেফাতে আহলে বাইত, পৃষ্ঠা- ৭৩; ইয়া নাবিয়্যুল মাওয়াদ্দাহ, খন্ড- ২, অধ্যায়-৫৯, পৃষ্ঠা- ৪৬৮]
১৯. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"فاطِمَة سِیِّدةُ نِساءِ أَهْلِ الجَنِّة."
অর্থ: ফাতিমা জান্নাতের নারীদের রাণী/নেত্রী!
[সহীহ্ বুখারী, খন্ড- ৩, অধ্যায়- মানাকুব্ ফাতিমা, পৃষ্ঠা- ১৩৭৪; মুসতাদরাকুল সহীহাইন, খন্ড- ৩, মানাকিব্ ফাতিমা, পৃষ্ঠা- ১৬৪; সুনানে তিরমিজি, খন্ড- ৩, পৃষ্ঠা- ২২৬; কানযুল উম্মাল, খন্ড- ১৩, পৃষ্ঠা- ৯৩; জামিউস ছাগীর, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা- ৬৫৪, হাদীস- ৫৭৬০; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা-৬০]
২০. রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন,
"فاطِمَة بَضْعَةُ مِنّی فَمَنْ أَغْضَبَها أَغْضَبَنِی."
অর্থ: ফাতিমা আমার অস্তিত্বের অংশ; যে তাকে রাগান্বিত করে, সে আমাকেও রাগান্বিত করে।
[সহীহ্ আল-বুখারী, খন্ড- ৩ কিতাবে ফাজায়েল, অধ্যায়- মানাকিবে ফাতিমা, পৃষ্ঠা- ১৩৭৪; খাসায়েসুল আলী- ইবনে নাসাঈ, পৃষ্ঠা- ১২২; জামিউস ছাগীর, খন্ড-২, পৃষ্ঠা- ৬৫৩, ৫৮৫৮; কানযুল উম্মাল, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা- ৯৩-৯৭; মুন্তাখাবু কানযুল উম্মাল বাহামিশুল মুসনাদ, খন্ড- ৫, পৃষ্ঠা- ৯৬; যাখায়িরুল উকবা, পৃষ্ঠা- ৩৭]
চলবে...
হাওজা নিউজ/ অনুবাদ ও সংকলন: রাসেল আহমেদ রিজভী